প্রকাশিত: Fri, May 5, 2023 5:30 AM
আপডেট: Tue, Jul 1, 2025 8:29 PM

গরু কেনার সামর্থ্য নেই, দুই যুগ ধরে ঘানি টানছেন আজাদ দম্পতি

সোহাগ হাসান, সিরাজগঞ্জ: বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের শ্রী দাসগাঁতী গ্রামের আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে দেখা যায়, ৬ মণ ওজনের ঘানি টানছেন এই দম্পতি। সরিষা থেকে তেল বের করতে দম্পতিকে ঘানি টানতে হয় একটানা আট ঘণ্টা। 

কাকডাকা ভোর থেকে কাঠের ঘানির ওপর কয়েকটি ভারী পাথর চাপিয়ে ঘুরতে থাকেন তারা। এভাবে তারা সরিষা থেকে ঘানির মাধ্যমে ফোঁটায় ফোঁটায় তেল বের করেন। দিনের পর দিন এভাবে ঘানির চাকা ঘুরালেও তাদের ভাগ্যর চাকা ঘোরেনি আজও।

কপালে জোটেনি সরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতা। ভাঙা ঘরে সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। দুই সন্তান বড় হয়ে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। 

আবুল কালাম আজাদ জানান, অসুস্থতার কারণে এখন ঠিকমতো ঘানি টানতে পারেন না। তবুও এই ঘানি টেনেই তিনি ৬ সন্তানকে মানুষ করেছেন। প্রতিদিন ফজর আযান থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত তারা দুই দফায় ১০ কেজি সরিষা ঘানিতে ভাঙান। এ থেকে ৩ কেজি তেল বের হয়। সেই তেল ৪শ টাকা কেজি দরে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করেন। আর ৫০ টাকা কেজি দরে খৈল বিক্রি করেন। এ থেকে প্রতিদিন তাদের ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা আয় হয়। তা দিয়ে এখন ৩ ছেলে এবং স্বামী-স্ত্রীর খাবার জোটে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। খুব কষ্টে দিন পার করছে তারা।

আজাদের স্ত্রী আসমা খাতুন জানান, বয়স বেড়ে যাওয়ায় এখন আগের মতো ভারী ঘানি টানতে পারেন না। মাথা ঘোরে, পা চলে না, প্রায়ই অসুস্থও হয়ে পড়েন। 

পাঙ্গাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম নান্নু বলেন, পরিষদ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা তৃপ্তি কণা মন্ডল জানান, ঘানি টানার বিষয়টি অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থল পরির্দশনে গিয়েছিলাম।  শিগগিরই তাদের সহযোগিতা করা হবে।

জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান